logo

যুক্তরাজ্যে হাসিনার ঘনিষ্ঠদের বিপুল সম্পদের সন্ধান

যুক্তরাজ্যে হাসিনার ঘনিষ্ঠদের বিপুল সম্পদের সন্ধান

যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ বলয়ের মধ্যে থাকা মন্ত্রী-এমপিসহ বেশ কয়েকজনের বিপুল সম্পত্তির সন্ধান মিলেছে। পাচার করা টাকা দিয়ে দেশটির আবাসন খাতে বিনিয়োগ করেছেন তারা। যার পরিমাণ ৪০ কোটি পাউন্ডের (৬ হাজার কোটি টাকা) বেশি।

তালিকায় রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার ও তাদের পরিবারের সদস্যরা।

যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান শনিবার (৩০ নভেম্বর) এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করেছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম অবজারভার ও বার্লিনভিত্তিক দুর্নীতিবিরোধী প্রতিষ্ঠান ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের যৌথ অনুসন্ধানে জানা যায়, এসব ব্যক্তিদের নামে দেশটির বিভিন্ন স্থানে প্রায় ৩৫০টি সম্পত্তি রয়েছে। ফ্ল্যাট থেকে শুরু করে সুবিশাল অট্টালিকা রয়েছে। যুক্তরাজ্য ও দেশটির বাইরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের (অফশোর কোম্পানি) নামে এই সম্পত্তির অনেকগুলো কেনা হয়েছে।

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সালমান এফ রহমানের পরিবারের সদস্যদের লন্ডনের মেফেয়ার এলাকার গ্রোসভেনর স্কয়ারে সাতটি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টের মালিকানা বা মালিকানায় অংশীদারত্ব রয়েছে। এগুলোর বেশিরভাগই অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে কেনা।

এর মধ্যে ২০২২ সালের মার্চ মাসে ২ কোটি ৬৭ লাখ ৫০ হাজার পাউন্ডে একটি অ্যাপার্টমেন্ট কিনেছিলেন সালমানের ছেলে আহমেদ শায়ান এফ রহমান। সেখানে ৩ কোটি ৫৫ লাখ পাউন্ডে কেনা একটি ফ্ল্যাটও রয়েছে। ২০২২ সালে খবর বেরিয়েছিল, লন্ডনে শায়ানের একটি বাড়িতে বিনা ভাড়ায় থাকতেন শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা।

গ্রোসভেনর স্কয়ারে এবং এর কাছাকাছি এই পরিবারের আরেক সদস্য আহমেদ শাহরিয়ার রহমানের আরও চারটি সম্পত্তি রয়েছে। এর মূল্য ২ কোটি ৩০ লাখ পাউন্ড। অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে এসব সম্পত্তি কেনা। এ বিষয়ে শায়ান রহমান ও শাহরিয়ার রহমানের আইনজীবীরা বলেছেন, মানি–লন্ডারিং আইনসহ আর্থিক বিধিবিধান পরিপূর্ণভাবে মেনেই সম্পত্তিগুলো কেনা হয়েছে।

যুক্তরাজ্যের ভূমি নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী যুক্তরাজ্যে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার পরিবারের প্রায় ১৬ কোটি পাউন্ড মূল্যের ৩০০টির বেশি সম্পদ রয়েছে। সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বৈশ্বিক সম্পত্তি নিয়ে গত সেপ্টেম্বরে ‘দ্য মিনিস্টার্স মিলিয়নস’ শিরোনামের একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা। সেই প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিদেশে থাকা তার সম্পত্তির মূল্য আনুমানিক ৫০ কোটি মার্কিন ডলার।

বাংলাদেশে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ব্যাংক হিসাবও জব্দ করেছে বিএফআইইউ। তাঁর ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের স্থাবর সম্পত্তি জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ওপর দেশত্যাগের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। এ ছাড়া অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ অর্থ অর্জনের অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

গার্ডিয়ান বলেছে, রাজনীতিকদের বাইরে বাংলাদেশের ধনী ও প্রভাবশালী ব্যবসায়ীদেরও যুক্তরাজ্যে সম্পত্তি রয়েছে। এর মধ্যে যুক্তরাজ্যের সারে এলাকায় বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের পরিবারের সদস্যদের দুটি সম্পত্তি রয়েছে। ১ কোটি ৩০ লাখ পাউন্ড দিয়ে অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে এসব সম্পত্তি কেনা হয়েছে। এ ছাড়া এলাকাটি পরিদর্শনের সময় আহমেদ আকবর সোবহানের এক ছেলের মালিকানাধীন একটি অট্টালিকার সন্ধান পেয়েছে অবজারভার।

নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের অভিযোগে তদন্ত করছে সিআইডি। দেশটিতে তাঁর সম্পত্তিও জব্দ করা হয়েছে। লন্ডনের কেনসিংটনে তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা কীভাবে ৩ কোটি ৮০ লাখ পাউন্ডের পাঁচটি সম্পত্তি কিনেছেন তা খতিয়ে দেখতে চায় বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

এমআর

December 2024

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat
1
2
3
4
5
6
7
8
9
10
11
12
13
14
15
16
17
18
19
20
21
22
23
24
25
26
27
28
29
30
31
logo
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: এম এইচ মামুন
অস্থায়ী কার্যালয়: সিদ্দিক ম্যানশন, পুরানাপল্টন, ঢাকা-১০০০।
ফোন : ০১৫৪০৫০৩৬৩৪
ই-মেইল: [email protected]
মুক্তকলাম © ২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত