আগামী জুনে চালু হতে পারে আশুগঞ্জ স্টিল রাইস সাইলো
অনলাইন রিপোর্ট
2024-11-30T23:42:07.430Z
বিভিন্ন জটিলতায় দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে নির্মাণাধীন আধুনিক স্টিল রাইস সাইলো নির্মাণ প্রকল্পের কাজ পুনরায় শুরু হয়েছে। প্রকল্পের মেয়াদ আরেক দফায় ৬ মাস বৃদ্ধি করে আগামী বছরের জুনের মধ্যেই শেষ করা সম্ভব হবে বলে দাবি করেছে সংশ্লিষ্টরা।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) প্রকল্প কাজ পরিদর্শন শেষে খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. আব্দুল খালেক সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।
বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে প্রায় সাড়ে ৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে উপজেলার চরচারতলা গ্রামের মেঘনা নদীর তীরে নির্মিত হচ্ছে এই প্রকল্পটি। খাদ্য বিভাগের তত্ত্বাবধানে লক্ষাধিক টন ধারণ ক্ষমতা এ বিশেষ প্রকল্পটির অবকাঠামো নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘তমা কনস্ট্রাকশন’। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দেশে খাদ্য সংরক্ষণে যুগান্তকারী অধ্যায়ের সূচনা হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দেশের খাদ্য পর্যাপ্ত মজবুত করতে দেশের কয়েকটি স্থানে প্রায় তিন হাজার ৬০০ কোটি (৩৫,৬৪৯ কোটি ৪ লক্ষ) টাকা ব্যয়ে ৮টি আধুনিক স্টিল রাইস সাইলো নির্মাণের উদ্যোগ নেয় খাদ্য মন্ত্রণালয়। প্রকল্পের অবকাঠামো নির্মাণে দেশীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশনের সঙ্গে ২০১৮ সালের ৪ এপ্রিল চুক্তি করে খাদ্য মন্ত্রণালয়। একই বছর প্রকল্পের নির্মাণ কাজও শুরু হয় এবং ২০২১ সনের এপ্রিলের মধ্যে হস্তান্তরের কথা ছিল। কিন্তু করোনা মহামারি, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের টানাপোড়েন ও সরকারের পট পরিবর্তনসহ নানান জটিলতার কারণে প্রকল্পের মেয়াদ ৪ দফা বৃদ্ধি করা হয়। সর্বশেষ মেয়াদে চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা থাকলেও ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত কাজ হয়েছে মাত্র শতকরা ৮০ ভাগ।
এ অবস্থায় শনিবার (৩০ নভেম্বর) প্রকল্প কাজ পরিদর্শনে আসেন খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. আব্দুল খালেক। তিনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের প্রতি দ্রুত কাজ শুরুর নির্দেশ দেন। প্রকল্প কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে তিনি জানান, প্রায় ৮০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে।
আগামী বছরের জুনের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক বলেন, এটি চালু হলে খাদ্য সংরক্ষণ আরও মজবুত ও আধুনিক হবে।
এরপর আশুগঞ্জ পুরাতন সাইলোর বিএমআরই কাজ দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।
এসময় আশুগঞ্জ সাইলো অধিক্ষক খন্দকার সিরাজুস সালেকীন, উপ প্রকল্প পরিচালক মো: রকিবুল হাসান ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কানিজ জাহান বিন্দুসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে তমা কনস্ট্রাকশনের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মো. খুর্শিদ আলম বিভিন্ন সমস্যায় কাজের ধীরগতি ও ব্যাহতের কথা স্বীকার করে জানান, বিদ্যমান সমস্যার সমাধান শেষে কাজ শুরু হয়েছে। আগামী বছর জুনের মধ্যেই নির্মাণ কাজ শেষ করা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, আধুনিক এই রাইস সাইলোর বৈশিষ্ট্য হলো, এটি ৩০টি স্টিল সাইলো বিনে গঠিত। প্রতিটি বিনের ধারণক্ষমতা ৩৫ হাজার টন। এতে কীটনাশক ছাড়া স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রের মাধ্যমে চালের আর্দ্রতা ও তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং চালের গুণগত মান বজায় রেখে ৩ বছর চাল সংরক্ষণ সম্ভব হবে।
চাল প্যাকেট ও বস্তাবন্দি করতে এতে রয়েছে ৫০০ টন স্পিডের বেল্ট কনভেয়িং ও চেইন কনভেয়িং সিস্টেম, যা প্রতি ঘণ্টায় স্বয়ংক্রিয় মেশিনে ৫০ কেজির ৮০০ এবং ৫ কেজির ৯৬০০ প্যাকেট তৈরি করতে সক্ষম।
নদীপথে চাল পরিবহনে ঘণ্টায় ১২০ টন স্পিডে লোডিং কার্যক্রম সম্ভব হবে।
এ প্রকল্পের আওতায় চাল রক্ষণের পাশাপাশি নির্মিত হচ্ছে অফিস স্টাফ ডরমিটরি বিল্ডিং, অফিসার্স ডরমিটরি, ইন্সপেকশন বাংলো, আনসার ব্যারাক, এমটি গানী বেগ গোডাউন, স্ক্রেপ গোডাউন, ওয়ার্কশপ কাম স্টোর, বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন, ট্রাক পার্কিং এরিয়া ও অভ্যন্তরীণ সড়ক ইত্যাদি।
ফোন : ০১৫৪০৫০৩৬৩৪
ই-মেইল: [email protected]